ঊহিনী উড়ানঃ মলয় শংকর মণ্ডল





মলয় শংকর মণ্ডল



ভাবসম্মিলন
অন্ধকার জলের গভীরে নুন নয়
হয়তো বা কোনো ক্ষতস্থান আছে।
স্মৃতির পোষাক পড়ে যে-সব দিন আলস্যে চলে গেল
তার গায়ে সন্ধ্যা নেমেছে মন্থরে।
প্রাকৃত জন্মের এই গ্রীষ্ম-
এক পশলা বৃষ্টি কি
পুরনো স্মরণগুলি জুড়ে দিতে পারে?
হায়! মাথুরের আত্মকথা যেন এই সময়প্রবাহ
হে শ্মশান প্রিয় বিষাদ শহর
প্রতিদিন আমাদের দেখা হয় বিনিদ্র ওষুধে।

পরিত্যক্ত কবিকে মনে করে
বায়ুবিকার বেড়েছে । আসন্ন ছুটির কোনও সম্ভাবনা নেই।
পূন্যস্নান ? তাও হবে না হয়ত । তিমিঙ্গিল একক সকাল
গিলে নিতে চায় আনন্দ আকন্দ রেণু ।
“মনে হয় সন্ধ্যা নামে” শিশুবিকাশ কেন্দ্রের ঘাঁটা চাল
বলে এই কথা –স্পর্শকাতরতা থেকে ।আর দেখো
ময়ূরাক্ষী দুমকার তলপেট চিরে দিয়ে চলে যাচ্ছে
বালি আর নুড়ি আর পাথরের ক্ষয়- আমাদের
শহরের কবির মতন বার্ধক্যভঙ্গুর , লিপিকাপ্রধান
মুর্গা আছে – ছড়ানো পালক – ওরা উড়ে যাবে
বিকেলের ম্লান রোদে ইতস্তত, দূরে । বয়স গিয়েছে চলে,
শিশ্নমুখে হাহাকার ।পাতাল ইঁদুর নিয়ে গেছে তার নিজস্ব কলম ।

ইতিহাস
অনেক তো হোল ইতিহাস । এবার আমার কবিজন্ম
মেপে দেখো আমি স্নায়ু অরন্যের গেরিলা কুসুম কীনা
নাকি শুধুই বিভ্রম ছায়াময় ধুলোর কণিকা , লিরিক শহরে ।
শহিদ বেদির পাশে কোনোদিন দেখেছি সময়
জারুল ফুলের মতো অভিঘাত তুলে মিশে গেছে ,
অসুখের দিনে
ক্ষুধার শরীরে দাগ ---উপোসি লবন
অযুত মায়াবি শোকগাথা জরিপ করেছে দাহভূমি ।
ক্ষুধার দশন উঁচু হয়ে আছে উড়ালপুলের নীচে
ঝুলে গেছে করুণার স্তন সুখের খেলায়
তাই দেখি ব্যাথাতুর অন্ধকারে
শুধুই পলাশগুচ্ছ হাতচিঠি নিয়ে ছুটে যায়
বনে বনে দাবের ব্রীড়ায় ।
বুকের ভিতরে ফোটে সুদূর শিমুল । মঞ্জরীত মধুমাসে
আমি চিনি মাটির মানুষ । আমি চিনি দুই কাঠা অরণ্যফসল

বোরান্তি একটি গ্রামের নাম
স্বপ্ন মনে হয় ; পাতার রেখায় আঁকা পথ, নিমগ্ন বাদাড়
অলীক প্রণয়কথা- ধুলো আর প্রকৃতির বনে ওই তুমি!
আগুন দাঁড়িয়ে থাকে। বাঁধের রুমালি বায়ু, একাকিত্ব
ছুঁয়ে দিলে উদ্ভ্রান্ত তুমি, মুখোমুখি পাথরের স্মৃতিতে
মনোডাক্তারের পাতা জাল,
পাহাড়ের সানুদেশে নামে যুগান্তর। উই, যাযাবর পাখিদের
বিকেলবেলাটি ক্ষণিক সফেন
উদ্দাম তাঁবুর হাসি, শোনো রাত্রিকালে, মানুষের থুতু থেকে
কিছুদূরে শালের সুদীর্ঘ সারি, কীর্তিনাশা চন্দ্রপ্রভা
অজস্র নক্ষত্র দুধে স্তব্ধ ঘড়ি, তুমি তাই শ্রেণিবদ্ধ পাতাভাঙা সিগারেট
জ্বালো মরুমনে।




No comments

Powered by Blogger.