শিলারিগাঁও : একটি নাম না-জানা ফুল

শিলারিগাঁও থেকে দেখা কাঞ্চনজঙ্ঘা

ইন্দ্রদীপ দত্তগুপ্ত

৩০ -৪০ টা লেপচা পরিবার, নিঃঝুম পরিবেশ, হঠাৎ অনামা পাখীর ডাক, নাম না জানা ফুলের দল আর অভিভাবকের মত কাঞ্চনজঙ্ঘা। এই নিয়ে শিলারিগাঁও। শিলারি নামে একরকম শাক থেকে জায়গার নাম শিলারিগাঁও। কালিম্পং ,আলাগারা হয়ে যে রাস্তাটা পেডং এর দিকে যাত্রা করেছে - সেটা ধরে কিছুটা এসে পেডং এর ৩ কিমি আগে বাঁ দিকে বাঁক। বোল্ডারের উপর দিয়ে গাড়ির চাকা গড়ালো আর সামনের সিটের হ্যান্ডেল ধরে ব্যালেন্স করে ঝুলে থাকতে থাকতেই দেখলাম শিলারিগাঁও এসে গেছে। হাসিমুখে বাসিন্দারা অভ্যর্থনা জানাচ্ছে। এখানে সবই হোম স্টে। পাহাড়ি মানুষরা কতটা আন্তরিক হতে পারে এখানে না এলে জানতেই পারতাম না। উপত্যকার যে কোনো জায়গা থেকেই কাঞ্চনজঙ্ঘার উপস্থিতি টের পাওয়া যায়। ২ কিমি দূরে রামিতে ভিউ পয়েন্ট। কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়োয় রং বদলের সাথে সাথে এখানের উপরি পাওনা হল - অনেক, অনেক নীচে কাঞ্চনজঙ্ঘার পাদদেশে তিস্তার অববাহিকা। 



সিকিমের মাঝিটার থেকে দার্জিলিং এর তিস্তাবাজার পর্যন্ত ১৪ টি বাঁকে প্রায় ১০০ কিমি তিস্তা এখান থেকে দৃশ্যমান। বর্ষাকাল ছাড়া অন্য যে কোনও সময়ে শিলারিগাঁও ছোট্ট ছুটি কাটানোর আদর্শ গন্তব্য। অনাহুত মেঘ, চমকে দেওয়া বৃষ্টি, অসংখ্য নাম না জানা পাখীর কাকলি আর সর্বোপরি এখানকার বাসিন্দাদের আপন করে নেওয়ার ক্ষমতা - সব মিলিয়ে যখন ফেরত আসার জন্য গাড়িতে উঠছি তখন সবার মনে একটাই প্রার্থনা - একবার, শুধু একবার বৃষ্টি নামুক অঝোরে। চোখ ঝাপসা হওয়ার একটা জুতসই অঝুহাত পাওয়া যায় তা হলে !

ছবিঃ লেখক


Powered by Blogger.