রামকৃষ্ণের মুখে গল্প : রাজদীপ রায়
রাজদীপ রায়
রামকৃষ্ণের মুখে গল্প
১.
ঘড়ির কাঁটায় বিধে ঝুলে আছে কবিখ্যাতিগুলি
বিকেল পেরিয়ে মিঠে পঞ্জরের ঝরে পড়ে বালি...
এইমাত্র লোকগান বাউলের মুখ থেকে উঠে
শুতে গেল ঘাসের চাদরে,তার কোনো সূর্য নেই
যে নদী উত্স হারিয়েছে অন্ধ ডাকনাম থেকে
জল এনে ঢেলে দিচ্ছে কবিদের করুণ চিবুকে
মঙ্গলকাব্যের পর হাওড়া জেলার হিম শীতে
তিনটে শকুন মারা গেছে,একটি সুবর্ণ গোধিকা
একে অপরের নামে গান লিখে বোলাচ্ছে জোত্স্নায়...
জলকাদা মেখে,সং সেজে,বাংলার মাঠে মাঠে
আকাশ বিদীর্ণ করে নেমে আসছে থরে থরে আলো
সাবেকী প্রথার মাটি,সন্দেহের বিষনীল জ্বালা
ঘড়িটি সময় ভুলে কখন ঝরিয়া গেছে ঠোটের তুণীরে...
২.
এ গাঁয়ে আসতেন চণ্ডীদাস
এ গাঁয়ের মাটিও বধির
তখন তাদের ভয় ছিল না শরীরে
তখন তাদের ভয় স্থির
কোকিলের গলা বেয়ে বেয়ে
উঠে আসে সেকালের রক্ত
অকালবর্ষণ বলো যাকে
সে তোমার নাড়ি ছেঁড়া ভক্ত...
বুক ফেটে বাইরে আসে
আনন্দ শোকের পদাবলী
যখন চুম্বন করো মেঘ
মৃত্যু ভয়ে কেঁপে ওঠে নলি
৩.
মুখে রক্ত উঠে আসে এমন একটি কথা
সেদিন সকালে উঠে চলে গেলো সুস্বাস্থ্যের দিকে
রয়ে গেলো নীরবতা শুধু,জলের আলতো কামড়...
তোমাকে বাড়িয়ে দেওয়া হাত
থেমে যায় বারবার
গলার ভেতর...
কাত্রায়,কেঁপে ওঠে,সন্দেহের
আমন্ত্রিত তীরে
গলা টিপে ধরেছিল যারা,দেখি আজ তারা গাইতে এসেছে
পুড়ে যাওয়া নশ্বরতা ঘিরে...
৪.
রক্ত তুলে নাচছি দেখো সন্ধ্যে সকাল
কিন্তু তুমি বলছ একটা বাঁদর কেমন
হেলছে দুলছে বাদুড় ঝুলছে বাড়ির ছাদে
একটি? না না লক্ষ্ লক্ষ বানর সেনা
তুমি বলছ বরং আস্ত সেতুই গড়
রক্ত নিংড়ে দাঁড় করানো শহর বড়ো
বড়ই বিধছে,ল্যাজ গুটচ্ছি মাটির তলায়
স্বাধীন বাক শক্তি নিয়ে ট্রেন চলে যায়...
৫.
গলায় ফুটেছে কাঁটা,কার সাধ্য টেনে বার করে?
আঠালো বিষাদ গাঢ় ছায়া দেয় ছায়া
তুমিও তেমন শ্যাম,রাধা না বোঝালে
কিছুই বুঝবে না যমুনার কালো জলে
বাঁশিটি আগুন পায়,আকাশের বৃন্ত থেকে ঝরে
পড়া
কদম্বৃক্ষের
মাটি
ছুঁতে চায় সমস্ত শরীর,সমস্ত পাঁজর নিংড়ে
ঠাকুমার গল্প বলে রাক্ষসের কথা
ক্রসিং পেরতে গিয়ে তুমি আটকে যাও
একতারা খসে পড়ে,গেরুয়া বসন
ছেলেবেলা থেকে ভেঙে যাওয়া খেলনার দল
উঠে আসে মুখে রক্ত মেখে
মা বলে,দেখলি বাবু পাখিদের এই উড়ে যাওয়া ?
একেই দিগন্ত বলে,মৃত বন্ধুদের প্রতিশোধ
Post a Comment