অভিষেক মুখোপাধ্যায়
হনন সম্মত হলে
পাঁক ঘেঁটে রক্ত তুলে দেখি মানুষের হাড়
চক্রাকার কালির নর্দমা।
যে হাত বুরুশখানি- ডুবেছে দানিতে
খড়্গে কেটে নিতে নিতে-
নিশীথবাহিত গণ নিরুদ্দেশে চলে
অস্তহিমাচলে, হলাহলে।
১.
কী বিষ জুড়ালে সোনা সফেদ কুর্তায়?
ছেঁড়ো... দড়ি আলগা করো চেরা সমুদ্রের-
দাঁড়গুচ্ছ
নাড়ো।
এ মহা ত্রিশূল তুমি শুনেছ আঙ্গিকে,
-মন্ত্রের মাধব নয়। দশক্রিয়া যৌথভাব নয়
অথচ মত্ততা আনে । নভোনীল মাড়িকে মাড়ির
ছুড়ির ছেনালি ঘষা মারে;
স্বপ্নের বেঘোরে দীর্ঘ ল্ল আকৃতির ঘোরে
হৃদি অঙ্গ চেনে বিধি, আলকুশ ঝোপের রাস্তা,
নিধুভঙ্গ ধ্বজ
গান
করো জারজ, জারজ...
দ্বিবর্ণ বিয়োও নাড়া- ভুট্টাহীন অস্থিরতা প্রাকৃত হালাল করে
নাও।
২.
অথ কথা ঘুমকাতুর- মাংসবরফির খণ্ড
কল্লা
থেকে তুলেছে ভবানী।
স্বীয়সম্ভবামি...
আমি তবে মাত কড়ি শান্তিকার্বাইন!
সোরা ও গন্ধক হয়ে নেমে আসি আমি তবে
মানুষের ভাতের থালায়-
রক্তছোপ ধায়। ধায় পুরুষাঙ্গে হাত
আবার জাগিয়ে তুলি নিদ্রিত ভূভাগ যা বনাত-
আতঙ্কগ্রস্থের
হাসিমুখ
কী ভাবো থুতুর মধ্যে
কেন পড়ে আছি
রতিকান্ত খাট ছেড়ে?
এভাবে প্রণয়মতে হুসন-এ-জান্নাত পাবো
চক্রাকার হুলফোটা অবদমনের
ধাতু খসে যাবে। খসিবে গোপন ধাত্রী
সাঁই আমার... চরণদাসী... তোর মাতৃমাধু
যে বিশুদ্ধ উষ্ণভাব বুনে গেল,
আলোক জিহ্বায়- দেখি তাই জাদুবাস্তবতা
অচুম্বন-
আকথা কুকথা
গণমুখে প্রচলিত মটকাপল্লীর দাবি-
চাক্কাজ্যাম মানিনা... চালাও।
পর্বত-
হের্ বোকা বুড়ো সরো।
এমন দৌড়বো যেন এই মৃত্যু ফোঁপানির
সুতোশব্দ কানে না পৌঁছায়।
আয়াতসফল সেতু মন্দাক্রান্তা কেঁপে ওঠে...
এমন দৌড়বো!
৪.
বহে হত্যাধাতু।
প্রতিদিন নতুন নতুন মড়া
পাঁক থেকে আদিম জ্যোৎস্নায়-
হেঁটে হেঁটে উঠেছে পশ্চিমে।
এই অন্ধ যমুনার অববাহিকায়
চুটায় আগুন নেবে
অতিকায় হরিকুণ্ড থেকে প্যাঁকাটির
ডগাটি মুড়োবে দাঁতে মড়া।
বহে বহে বহে হত্যাধাতু
কৃষিকাজে বহে জন্মজরা
অন্তরীপে ভার করে দোলনসংকেত।
হে মন্দ দশপ্রহরণে অনিকেত
তোমার নাভিতে বাজি, ঠাঁই দাও বোবাকালা পদ্মের বিভবে।
সারা অঙ্গে ধরপাকড়,
হারাকিরি, শতচূর্ণ শিখি
বীণাবাদিনীর নাড়ী
কাটে শুঁয়োপোকা
আমাকে ভজায় ওর
সংযত অর্হৎ স্পর্শ-
শব্দ উল্কা মেঘ
সারা গা নিরীহ তবু
গর্ভের আবেগ
ধ্রুব স্থিরতার
আড়ে, মাতৃময়ী আলো
এ দেহে সন্দেহ করো
যদি সরু শুঁয়োহীন
সারস পালক লেগে থাকে!
কালে কালে নীল জটা গোমুখসম্ভবা
বরে অবলোকিতেশ
ষড়ভঙ্গ তেজতপ্ত,
সেদ্ধ মাড় নুনমাখা স্মৃতির ফাটলে
ঠাণ্ডাই ভাঁড়ের
মাটি- গুঁড়োদুধ রতিচিন্তা;
সবশেষে শর্করা
মিশিয়ে,
মুখের গোড়ায় ধরে।
মুখঝামটা দেয়।
বিরুদ্ধযোনির দিকে
অধোচেতনার বশে
আমিও আসক্ত করি
স্পর্শ রূপারূপ
দেখেছি বিগ্রহঝড়-
আলুথালু শুনেছি গুঞ্জর মুণ্ডমালা
ভাসন্ত তামসে
স্বাহা, মৃদু উচ্চারণে জপরত অস্ ধাতু
শৃগাল আনন্দরক্ত
ঢেলেছে জিহ্বায়। আমি তার কতটুকু
বিদেহঘ্রাণেন
অর্ধপান করতে পারি?
লাবণ্যে এপ্রিল মাস
খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে নাচে মিথুনঘোড়ার
সিল্যুয়েট- লাল
বাড়ি; সে মূঢ় অহংবুদ্ধ- গর্জনতেলের যাতায়াত
বিষণ্ণ মন্দির
খাঁজে, পানশালায়; ভানক্ষেত্রে গেরুয়া নিনাদ!
বিষাদ ছাতিম গাছ
দূরে বিশ্ব জলভরা ঔরসের ধুনি
বিষাদ ফুলচোর। ছদ্ম
ব্ল্যাক উইডো রসাতল... গজাল ফোটানো
সকাম সাধনা অন্তে
সত্যি নেভে সেইসব বিষাদজ্বালানি?
মগজে বিস্বাদ বড়-
খেল্ দেখাও নাভিশ্বাস-
ওরে আরো করো সম্মোহন।
৭.
বাত্যাতাড়িতের মতো
দেহচক্রবালে-
শুধু ভ্রম! শুদ্ধ
অগ্নি! এ শরীর জঙ্গলমহল
এক পাগল ঐরাবত-
মাথাখারাপ মাহুত খ্যাদানো মহাঠাম
হলুদ মজ্জার মধ্যে
উবু হয়ে বসে ছিল... কেননা এইসব
আরবি মালসায় পোড়া
বিজরামাটির ঠাণ্ডা কাদাভাব ছিল!
ছ্যাঁত করে উঠেছিল
জল।
যখন বাটাম নিয়ে দূর
থেকে দৌড়ে আসে ডোম
তখনই উপুর করে দিই
ভবলীলা।
ধোঁয়াপর্দা আইভরির
বেদম ভেদনে চেরে... শিলা চূর্ণ শিলা
কাঁদনা ওঠে বৃংহণ!
বৃংহণ!
শুনেছি অসাড় কেল্লা
নিশি শুনি প্রথম আষাঢ়ে...
ফনা নাড়ে জন্মগাছ।
ফনা তোলে
বিরুৎপ্রজাতি হিংসালতা
তোপ গায়। থাবড়া
মারে... বজ্র টাঁড়ে আকাশ ফাটায়
ঝলকে ঝলকে খাঁড়া
নেমে আসে হাঁড়িকাঠে ভাসে চন্দ্রদোষ
এই শিহরন এই ফাঁসা
পাঁঠা চ্যুত অন্ধকারে
এষ সমাংসরক্ত- হে
যোগিনী তোমার শিয়রে
ঠায় হাঁটুবসা! সাদা
পট্টি রাখা অবিক্ষত গ্রীবা!
দুধারে জমাট তামা,
সিদ্ধিবাটা- কাচামাঞ্জা- আধোজাগরূক।
৯.
ধানশিষ- প্রোথিত
শিবা বিকৃতি বিকার...
আঁশবটি থেকে ধুয়ে,
কানকোপটকাচর্বিমাংসমেধা
নিবিষ্ট গুপ্তের
মতো প্রদোষমৌতাতে গোনো
ভাঁড়বন্দী ফর্ম্যালিন...
গোনো ডুবো চক্রবৎ ট্রলাররহস্য-
আলোবাড়ি; প্রসূত মূর্ছনা।
আমিও সতর্ক হাসি,
দূরে দেখি বনোয়ারি শমীবৃক্ষতলে
কালঘামস্নাতা এক
মহাবিদ্যা বিভাময়ী শ্যামাঙ্গে ধরেছে-
সেই রূপ!
উড়ন্ত ঝাঁটায়...
তোমার সংস্রবময় শূন্যে চড়া দীর্ঘ ন মিনিট।
Post a Comment